মেয়েদের ইউরিন ইনফেকশনের কারন, লক্ষন ও প্রতিকার

ইউরিন ইনফেকশন মূলত ব্যাকটেরিয়াজনিত একটি সংক্রমণ। কিডনি, মূত্রনালি, মূত্রথলি বা একাধিক অংশে একসঙ্গে এ ধরনের ইনফেকশন হতে পারে। ইনফেকশন হলে কীভাবে বুঝবেন, কেমন সাবধানতা অবলম্বন করবেন সেই পরামর্শ দিয়েছেন— ডা. এনামুল হক

আমাদের শরীরে নিয়মিত বর্জ্য তৈরি হয় এবং তা মলমূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। কিডনি রক্তকে ছেঁকে পরিশোধিত করে এবং বর্জ্য হিসেবে প্রস্রাব বের করে দেয়। শরীরের দুটো কিডনি প্রতি মিনিটে এক লিটারেরও বেশি রক্ত ছেঁকে নিচ্ছে। এ ছাঁকনের মাধ্যমে রক্তের ক্ষতিকর বর্জ্য যথা ক্রিয়েটিনিন, ইউরিক অ্যাসিড, অ্যামোনিয়া ইত্যাদি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

কোনো কারণে কিডনিতে ইনফেকশন হলে বা কিডনি রোগ হলে রক্তে ক্রিয়েটিনিন, ইউরিক অ্যাসিড এসব কিডনি ছাঁকতে পারে না। যেসব কারণে কিডনিতে ইনফেকশন হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—প্রতিদিন গোসল না করা, গোপনাঙ্গ পরিষ্কার না থাকলে, আঁটোসাঁটো বা অপরিষ্কার অন্তর্বাস পরলে, পানি কম খেলে বা প্রস্রাব বেশিক্ষণ চেপে রাখলে সেখান থেকে ইউরিন ইনফেকশন হতে পারে।

লক্ষণ
প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া, প্রস্রাবের রাস্তায় চুলকানি হলে এবং তলপেটে ব্যথা ইউরিনের প্রধান লক্ষণ। এ ছাড়া জ্বর, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, প্রস্রাবের রঙের পরিবর্তন, দুর্গন্ধ, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ, প্রস্রাবে অতৃপ্তি হতে পারে। এসব সমস্যার পাশাপাশি বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, রুচি কমে যাওয়া, শরীর দুর্বল লাগার মতো লক্ষণ থাকতে পারে। এ উপসর্গগুলো যদি মাঝেমধ্যেই হয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

কারণ
প্রস্রাবের সংক্রমণের অনেক কারণ রয়েছে, তবে মূল কারণ হচ্ছে, মূত্রপথে ব্যাকটেরিয়ার প্রবেশ বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। এটা বিভিন্নভাবে হতে পারে। যেমন—

মলত্যাগের সময় পায়ুপথ থেকে ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালিতে ঢুকে যাওয়া।

মলত্যাগের পর পায়ুপথের পেছন থেকে সামনের দিকে টয়লেট টিস্যু ব্যবহার করলে, টিস্যু মূত্রপথের সংস্পর্শে এসে ব্যাকটেরিয়ার অনুপ্রবেশের মাধ্যমে ইনফেকশন তৈরি করতে পারে।

ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে না চললে যৌন মিলনের সময় ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে।

নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্য হলে, বিশেষ করে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে।

যারা হাইকমোড ব্যবহার করেন। কমোডে লেগে থাকা ব্যাকটেরিয়া যে কোনো উপায়ে মূত্রনালিতে এসে ইনফেকশন ঘটাতে পারে।

যারা দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখেন তাদের ব্যাকটেরিয়া ওভার গ্রোথ হয়ে ইউরিন ইনফেকশন হতে পারে।

যারা পানি কম পান করেন।

সঠিকভাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে না পারলে ইত্যাদি।

কী করবেন
সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, নিয়মিত গোসল করা ও নিয়মিত ধোয়া কাপড় পরিধান করা। দৈনিক আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বেশিক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখা যাবে না। মেয়েদের পিরিয়ডের সময় স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা। এ ছাড়া মলত্যাগের পর টিস্যু ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অবশ্যই টিস্যু দিয়ে মোছার সময় সামনে থেকে পেছনের দিকে মুছতে হবে।

পানি ব্যবহারের সময়ও একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। সহবাসের আগে ও পরে প্রস্রাব করে নেওয়া এবং যোনিপথের আশপাশ ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া উচিত। পাতলা ঢিলাঢালা সুতির কাপড় পরুন। প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, ই, সি-সমৃদ্ধ খাবার (টক ফল, আমড়া, পেয়ারা, শসা, শাকসবজি ইত্যাদি) খাওয়া।

লেখক : মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, মা ও শিশু

Realted Tag:

Marketa Vondrousova Wimbledon Shoe Brush Body Pillows Pillow Cubes Purple Pillow Sanitation Towel Superfeet Insole The Woman king Showtimes Top Women Boxers in the World Electric toothbrush charger Artificial Grass for Dogs Flare Leggings 4K Laptops