রাতে পা কামড়ানোর কারণ ও দূর করার উপায়

রাতে পা কামড়ানো বা লেগ ক্র্যাম্পের সমস্যা আপনাকে পুরো রাত জাগিয়ে রাখতে পারে। আপনি একা নন, আমেরিকান ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান-এ প্রকাশিত ২০১২ সালের এক গবেষণা অনুসারে, প্রায় ষাট শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কখনো না কখনো রাতে পা কামড়ানোর সমস্যা ভুগে থাকেন। পায়ের এই ক্র্যাম্প রাতের ঘুম নষ্ট করে। সেইসঙ্গে ব্যথা ও অস্বস্তি তো রয়েছেই। জেনে নিন পা কামড়ানোর সমস্যা আসলে কী, কেন হয় ও করণীয় সম্পর্কে-

পা কামড়ানো কী?
পা কামড়ানো বা লেগ ক্র্যাম্প পেশির সংকোচনের জন্য হয়ে থাকে যা কয়েক সেকেন্ড বা কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে। এটি সাধারণত পায়ের পাতা থেকে হাঁটু পর্যন্ত হতে পারে। এটি হাঁটুর পেছনের পেশীতে টানও ধরাতে পারে। যদিও আমরা বেশিরভাগই কখনো না কখনো পা কামড়ানোর সমস্যায় ভুগে থাকি তবে পঞ্চাশের পর এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। বিএমসি ফ্যামিলি প্রাকটিস ২০১৭-এর এক গবেষণায় এমনটাই প্রকাশ করেছে। জেনে নিন পা কামড়ানোর কারণ সম্পর্কে-

যথেষ্ট হাঁটাচলা না করলে
কোনো কোনো গবেষক পা কামড়ানোর সমস্যার জন্য আমাদের আধুনিক জীবনযাপনকে দায়ী করেছেন। যেমন দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা, হাঁটাচলা করতে হয় এমন কাজ কম করা, হাঁটার বদলে রিকশা বা অন্যান্য বাহন ব্যবহার করা, সিঁড়ির বদলে লিফট ব্যবহার করা, অবসর সময় শুয়ে-বসে কাটানো ইত্যাদি কারণে পা কামড়াতে পারে।

ভুল ভঙ্গিতে ঘুমালে
পা কামড়ানোর জন্য দায়ী হতে পারে আপনার ভুল ভঙ্গিতে ঘুমানোর অভ্যাসও। ঘুমানোর ভঙ্গির কারণে পায়ের পাতা ও উপরের দিকে পেশিতে টান পড়তে পারে। পা দীর্ঘ সময়ের জন্য এভাবে থাকলে এই সমস্যা বাড়ে। এমনকি অল্প নড়াচড়াও ক্র্যাম্প সৃষ্টি করতে পারে। তাই পা স্বাভাবিক পজিশনে রেখে ঘুমান। একেবেঁকে ঘুমাবেন না।

ঋতু পরিবর্তন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঋতু পরিবর্তনের সময় পা কামড়ানোর সমস্যা খুবই স্বাভাবিক। বিশেষ করে গরমে এবং শীতের আগে আগে এটি বেশি হতে পারে। যদিও এটি সবার ক্ষেত্রে ঘটে না তবে ভুক্তভোগীর সংখ্যা কম নয়। এ ধরনের ক্র্যাম্প নার্ভে সমস্যার কারণে হতে পারে, পেশিতে সমস্যার কারণে নয়।

পানিশূন্যতা
রাতে পা কামড়ানোর সমস্যার জন্য অন্যতম দায়ী হতে পারে পানিশূন্যতা। জার্মানির গোয়েথে ইউনিভার্সিটির ক্রীড়া বিজ্ঞানের অধ্যাপক মাইকেল বেহরিঙ্গার বলেছেন, ‌‘পেশির ক্র্যাম্পের ক্ষেত্রে স্পষ্টই ঋতুভিত্তিক প্যাটার্ন দেখা যায়, এটি সংখ্যা গ্রীষ্মে বেশি এবং শীতকালে কম হয়। অতিরিক্ত তাপ ও শরীরে পানিশূন্যতার কারণে ক্র্যাম্প বেড়ে যেতে পারে। পানিশূন্যতার কারণে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হতে পারে। যা ক্র্যাম্প আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

পুষ্টির অভাব
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাবে পা কামড়ানোর সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এই ইলেক্ট্রোলাইটগুলো রক্ত ​​এবং পেশিতে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। যে কারণে এগুলোর অভাবে দেখা দেয় পা কামড়ানোর মতো সমস্যা। তবে এ সম্পর্কিত অনেক গবেষণা এখনও অসমাপ্ত রয়েছে। তাই এই পুষ্টি উপাদানগুলো কীভাবে ক্র্যাম্পিং এর উপরে সরাসরি প্রভাব ফেলে তা জানার জন্য আরও অনেক গবেষণা প্রয়োজন।

দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সারাদিন বা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে পা কামড়ানোর সমস্যা যারা বসে থাকেন বা বসে কাজ করেন তাদের থেকে বেশি দেখা যায়। যখন আপনি দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন কিন্তু নড়াচড়া করতে পারেন না তখন পানি ও রক্ত শরীরের নিচের অংশে এসে জমা হয়। এটি শরীরে তরলের ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। যা ক্র্যাম্পিংয়ের কারণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থা
গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন পা কামড়ানোর সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওজন বৃদ্ধি এবং সঞ্চালন ব্যাহত হওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, মায়ের রক্তনালী এবং স্নায়ুর ওপর ক্রমবর্ধমান ভ্রূণের চাপের কারণেও ক্র্যাম্পিং হতে পারে।

পা কামড়ানো প্রতিরোধে যা করবেন

ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার খান
আপনার প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত করুন। বেশিরভাগ মানুষই এই খনিজ উপাদান গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্ব দেন না যদিও এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শিমের বিচি, বাদাম, আস্ত শস্য, সবুজ পাতাযুক্ত শাক এই উপাদানের সবচেয়ে বড় উৎস। তবে কোনো কোনো গবেষণায় দেখা গেছে, এটি কারও কারও ক্ষেত্রে কাজ নাও করতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে খাবারের তালিকা ঠিক করতে পারলে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন বি পা কামড়ানোর সমস্যা দূর করতে কাজ করে। এগুলোর পক্ষে এখনও শক্তিশালী প্রমাণ নেই তবে ছোট মাছ, আস্ত শস্য, শাক-সবজি খাওয়ার অভ্যাস মন্দ নয়।

হাইড্রেটেড থাকুন
দিনের বেলা পর্যাপ্ত পানি পান করুন চেষ্টা করুন। বিশেষ করে আপনি যদি অতিরিক্ত ঘামেন বা নিয়মিত এক্সারসাইজ করেন তাহলে শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে হবে। গলা শুকিয়ে আসা, মাথাব্যথা, ক্লান্তি ও শুষ্ক ত্বক হলো শরীরে পানিশূন্যতার অন্যতম লক্ষণ। এক্ষেত্রে প্রস্রাবের রং দেখেও ধারণা পেতে পারেন। প্রস্রাব হলুদ হলে বুঝতে হবে শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

Realted Tag:

Marketa Vondrousova Wimbledon Shoe Brush Body Pillows Pillow Cubes Purple Pillow Sanitation Towel Superfeet Insole The Woman king Showtimes Top Women Boxers in the World Electric toothbrush charger Artificial Grass for Dogs Flare Leggings 4K Laptops