বিয়ের পর খুব একা লাগে, স্বামী সময় দেয় না…

এক সময়ের দূরন্ত মেয়েটিই কারো স্ত্রী হয়ে যায়। তার আগেই বিয়ে নিয়ে নানারকম সুখ-স্বপ্ন থাকে। তারা মনে করেন যে, বিয়ের পর জীবনটা হয়তো অনেক বদলে যাবে। পছন্দের মানুষের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পরে তার জীবন অনেক সুন্দর হবে। এরকম নানা আশা নিয়েই প্রিয় মানুষের গলায় মালা দেন। কিন্তু তার জীবনটা যে সত্যিই বদলে যাবে, আর কিছুই আগের মতো থাকবে না, এরকম খারাপ দিকটা কেউ ভাবেন না।

অনেক মেয়ের জীবনই হয়তো বিয়ের পর রূপকথার মতো সুন্দর হয়। কিন্তু আমার মতো ভাগ্য যার, তার কী হয়? তিনি একাকিত্বে ভুগতে শুরু করেন। যেমন আমার অবস্থা হল। আমি কি বিয়ের আগে ভেবেছিলাম যে, বিয়ের পরে আমার জীবন একাকিত্বময় হবে? কখনো ভাবিনি। আমার স্বামীকে আমি ভালোবাসি। কিন্তু একটু ভালোও থাকতে চাই। আজ বাধ্য হয়ে সব কথা লিখে পাঠাচ্ছি বিশেষজ্ঞের কাছে। ধীরে ধীরে আমার সব কথাই লিখব। অনুগ্রহ করে ধৈর্য্য ধরে পড়ুন। আমায় সাহায্য করুন।

আমার বয়স ২৮ বছর। আমার কয়েক মাস হল বিয়ে হয়েছে। ছয় মাসের সংসার। সম্বন্ধ করেই বিয়ে হয়েছিল। তবে বেশ কয়েক বছর ধরেই স্বামীকে চিনতাম আমি। বিয়ের আগে থেকেই আমাদের মধ্য়ে মানসিক বন্ধন তৈরি হয়েছিল। আমি ওকে ভালোবেসে ফেলি। তবে বিয়ের আগে কোনোদিন একা লাগেনি। এত মন খারাপ হত না। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই আমার মনখারাপ হতে শুরু করে। আমি একাকিত্বে ভুগতে শুরু করি।

ওকে কাছে পাই কোথায়: আমার খুব একা লাগে এখন। কিছুই ভালো লাগে না। এই পরিস্থিতিতে আমি মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছি। আমরা দুজনেই চাকরি করি। তাই একে অপরের সঙ্গে খুব বেশি সময় কাটাতে পারি না।

আমরা যেখানে থাকি, সেখান থেকে স্বামীর অফিস অনেকটাই দূরে। তাই ওর আসতে যেতে প্রচুর সময় লেগে যায়। অনেক দেরি করে বাড়ি ফেরে। একসঙ্গে মাত্র ৪ ঘণ্টাই কাটাতে পারি আমরা।

শুধু ঝগড়া হচ্ছে, সাহায্য করুন
অফিসের পরেও ও নানা কাজে যুক্ত থাকে। তাই সপ্তাহান্তেও ওর আমার জন্যে সময় হয় না। আমায় একা রেখেই বেরিয়ে যায় ও। এই কথা আমি বিয়ের আগে থেকেই জানতাম। ও আমায় জানিয়েছিল। সেই সময়ে আমি ওকে অনেক সাপোর্ট করতাম। ওর পছন্দের কাজ করার জন্যে উৎসাহিত করতাম। ভেবেছিলাম, আমি হয়তো মানিয়ে নিতে পারব। আমি এখনও চাই না, ও আমার জন্যে কাজ ছেড়ে দিক!

কোনো প্রতিবেশীকেও আমি চিনি না। কারণ, আমরা এখানে নতুন আবাসিক। আমার কাছে কোনও অপশন নেই। বাড়িতেই বেশিরভাগ সময়টা আমাকে থাকতে হয়। খুব একা লাগে। সেই জন্য আমিও ওর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ফেলি। কথায় কথায় ঝগড়া বেধে যায়। আমার স্বামীও হয়তো এর কারণ জানেন। কিন্তু ও সেই ট্রেনিংটা সম্পূর্ণ করতে চায়। কী করব এখন আমি? বিশেষজ্ঞের পরামর্শ চাইছি। অনুগ্রহ করে আমায় সাহায্য করুন।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
পরামর্শ দিচ্ছেন কামনা চিব্বার। দাম্পত্য জীবনে নানা সমস্যা আসতেই থাকে। কিন্তু দুজনে মিলেই সেই সমস্যা সমাধান করতে হবে। আর সেটাই আপনাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। সম্পর্কে এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। আপনি একটি কাজ ঠিক করেছেন যে, স্বামীকে জোর করেননি। তার পছন্দের কোনো কাজ থেকে তাকে বিরত করলে ভালো লাগত না।

সমস্যা আরো জটিল হত। তবে আপনারা এই বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন। তাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন যে, কীভাবে আপনারা একে অপরের সঙ্গে আরো বেশি সময় কাটাতে পারেন? আপনাদের উইকেন্ড রুটিনটা কি একটু পরিবর্তন করা সম্ভব? এটা তার কাছে জানতে চান।

একসঙ্গে সমস্যা সমাধান করুন: যদি তিনি সেই ট্রেনিং চালিয়ে যেতে চান, তবে তাকে সেটা করতে দিন। কিন্তু আপনিও নিজের জন্য কিছু অ্যাক্টিভিটি বেছে নিতে পারেন। আপনিও কোনো হবিকে গুরুত্ব দিতে পারেন। যেমন, আপনার যদি ছবি আঁকতে ভালো লাগে, তবে সেই ক্লাসে মন দিতে পারেন। নতুন করে আবার শুরু করতে পারেন।

পাশাপাশি আপনাকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করতে হবে। বিষয়টি এমনভাবে দেখুন যে, এই পরিস্থিতি আপনাকে একাই সামাল দিতে হবে। আপনার স্বামী এখানে নেই। তাই আপনাকেই কোনো না কোনো পথ বের করতে হবে। নিজের ভালো লাগার পথ খুঁজে বের করতে হবে।