কেউ ঘন ঘন হাঁচি দিচ্ছেন, এটি খুব একটি পরিচিত দৃশ্য। সকালে ঘুম থেকে উঠেই হঠাৎ করে শুরু হলো একের পর এক হাঁচি। হাঁচি কমার যেন নামই নেই। ঘুম থেকে উঠেই এমন বিপদে পরেছেন কখনো? ফ্যানের বাতাস সরাসরি লাগলে, এসি রুমে থাকলে, পুরোনো বই খাতা ঘাটাঘাটি করলে, বা রাস্তায় বেরোলে হাঁচি পিছু ছাড়তে চায় না। আপনি যদি প্রায় প্রায় এমন অবস্থায় পরে থাকেন তাহলে আপনার যে সমস্যা হচ্ছে তাহলো অ্যালার্জিক রিহনাইটিস। বিশ্বের প্রায় ১০-৩০% মানুষ এই সমস্যায় ভোগেন।
কেনো এমন কেউ ঘন ঘন হাঁচি হচ্ছে, কি করলে নিস্তার পাবেন এমন নানা প্রশ্ন আপনাদের মনে। আমরা পাঠকদের জন্য ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করবো আজ। জেনে নিন অতিরিক্ত হাঁচির আদ্যোপান্ত।
১. কী কারণে হয় এমন হাঁচির প্রকোপ
আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অতিরিক্ত সংবেদনশীলতার কারনে এমন হয়। কিছু নির্দিষ্ট বস্তুর প্রতি আপনি অ্যালার্জিক হতে পারেন। যেমন ধুলা, ধোঁয়া, ফুলের রেণু, পশম, এমনি কোনো কোনো খাবার। এসব বস্তু শরীরে প্রবেশ করলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আপনাকে রক্ষা করার চেষ্ঠা করে। নিঃসরণ করে হিস্টামিন। এই হিস্টামিনের কারণে বারবার হাঁচি সহ আরো কিছু সমস্যা তৈরি হয়।
২. সারা বছর জুড়েই থাকতে পারে সমস্যার প্রকোপ
গোটা বছর জুড়েই অ্যালার্জিক রিহনাইটিস এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় কারো কারো। অল্প ধুলা, ডাস্ট মাইটেই আক্রান্ত হয় তারা। ঘরের ধুলো ঝাড়তে যেয়েও চোখ, মুখ লাল হয়ে যায়, নাক দিয়ে পানি পড়তে থাকে।
৩. কারো কারো সমস্যা দেখা দেয় বছরের নির্দিষ্ট ঋতুতে
কিছু মানুষ ঋতু পরিবর্তনের সময় এ সমস্যায় বেশি ভুগে থাকেন। শীতকালে প্রকোপ বেশি দেখা যায়। শীতকালে বাতাস শুষ্ক থাকে। এসময় ধুলো, ফুলের রেণু ধোঁয়া এসব দিয়ে সহজেই আক্রান্ত হয় অনেকে। শীতের শেষে ঋতু পরিবর্তনের সময় সরাসরি ফ্যানের বাতাসের কারনেও অনেকের সমস্যা শুরু হয়।
৪. বংশগত ভাবেই এই সমস্যাটি পেতে পারেন আপনি
দীর্ঘদিন ধরেই এমন হাঁচি কাশিতে ভুগতে থাকলে খুঁজে বের করতে হবে তার মূল কারণ। খেয়াল করলে দেখবেন আপনার পরিবারের অন্য কোনো সদস্যও এই সমস্যাতে ভুগছে। আপনার বাবা মায়ের এমন সমস্যা হলে আপনার ও হতে পারে। দেখা যায় একই রকম জিনিসের প্রতি সংবেদনশীল হয় পরিবারের সদস্যরা।
৫. অন্যান্য যেসব লক্ষন দেখতে পাবেন হাঁচির পাশাপাশি
– নাক বন্ধ থাকা
– নাক দিয়ে পানি পরা
– নাক ও মুখ চুলকানো
– চোখ চুলকানো, লাল হয়ে যাওয়া ও চোখ দিয়ে পানি পরা
– সারা গায়ে চুলকানো, চাকা চাকা হয়ে যাওয়া।
৬. সবচেয়ে বেশি প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় যেসব জিনিসের কারণে
– পুরোনো বইখাতা, পুরোনো কাপড় চোপড়, তুলার বালিশ, লেপ, কার্পেট, পর্দা
– ট্যালকম পাউডার, পারফিউম, আতর
– পোষা প্রাণীর লোম, পাখির পালক, ফুলের পরাগরেণু,
– চুলার ধোঁয়া, সিগারেটের ধোঁয়া, কলকারখানার ধোয়া
– কিছু নির্দিষ্ট খাবার যেমন, গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, চিংড়ি, পুঁই শাক
– ঠান্ডা পানি, ঠান্ডা খাবার যেমন আইসক্রিম, বরফ।
৭. প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম এই সমস্যায়
রিহনাইটিসের রোগিরা এন্টিহিস্টামিন ওষুধ, নাকে ড্রপ বা স্প্রে ব্যবহার করেন। ওষুধ উপশম দিলেও সবসময় পুরোপুরি প্রতিকার দেয় না। ওষুধ বন্ধ করলেই আবার সমস্যা শুরু হয়। সেজন্য যেসব জিনিসে অ্যালার্জি হয় সেগুলো এড়িয়ে চলুন। বালিশ, চাদর, বিছানা পর্দা নিয়মিত রোদে দিন। ঘর পরিষ্কারের কাজ, বাগানের কাজ করার সময় নাকে মাস্ক পরিধান করুন। বেশি ঠান্ডা বা বেশি গরম এড়িয়ে চলুন।
৮. সাইট্রাস ফল বা ভিটামিন সি যুক্ত খাবারে উপশম মিলবে
নোবেল বিজয়ী লিনাস পোলিং গবেষণায় প্রমাণ করেন যে ভিটামিন সি ঠান্ডাজনিত রোগ উপশমে অনেক কার্যকর। বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ কাজ করে। হাঁচিতে কুপোকাত অবস্থায় কয়েকটুকরা লেবু চুষে খেয়ে নিন। ম্যাজিকের মত কাজ করবে হাঁচি কমাতে!
৯. রং চা আপনাকে কিছুটা স্বস্তি দিবে
চা এর সঙ্গে লেবুর রস ও আদা মিশিয়ে খেলেও উপশম মিলবে। গরম পানিতে মেনথল মিশিয়ে নিন।
এরপর মাথা একটি বড় তোয়ালে দিয়ে ঢেকে ভাপ নিন। এর ভাপ নিলে নাক বন্ধ অবস্থা থেকে দ্রুত মুক্তি পাবেন।
১০. ডাক্তারের পরামর্শ মত চিকিৎসায় নিরাময় পাবেন
এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধে কাজ হয় না অনেকের। অ্যালার্জির প্রকোপ বেশি থাকলে ইমিউনোথেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। অযথা এন্টিবায়োটিক খাবেন না। মনে রাখবেন এই রোগে এন্টিবায়োটিকের কেনো কার্যকারিতা নেই।
প্রিয় পাঠক আপনাদের স্বাস্থ্য সচেতনা বাড়ানোর জন্য আমাদের সমস্ত প্রচেষ্ঠা। লেখাটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ দেহ’র সাথে থাকার জন্য।
Realted Tag:
Marketa Vondrousova Wimbledon Shoe Brush Body Pillows Pillow Cubes Purple Pillow Sanitation Towel Superfeet Insole The Woman king Showtimes Top Women Boxers in the World Electric toothbrush charger Artificial Grass for Dogs Flare Leggings 4K Laptops