Vitamin P এর অভাব শরীরের প্রতিটি অঙ্গকে নষ্ট করতে পারে, যা যা খেতে হবে

Vitamin P Rich Foods: ভিটামিন পি এর নাম বেশিরভাগই শোনেননি। তবে এই ভিটামিনের অভাব শরীরকে সমস্যা ফেলে। সেই কারণে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। এবার এমন খাবার খান যা পি ভিটামিনের ঘাটতি কাটায়।

আমাদের মধ্যে বহু মানুষই ভিটামিন পি-এর নাম শোননেনি। তবে শরীরে যেমন ভিটামিন এ, সি, ডি প্রয়োজন ঠিক তেমনই জরুরি ভিটামিন পি। এই ভিটামিন দেহের নানা কাজে লাগে। এমনকী এই উপাদান বহু গুরুতর অসুখ থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে যে এই ভিটামিনকে এখন ফ্ল্যাভানয়েডস বলা হয়।

বিশেষজ্ঞদের কথায়, সুস্থ থাকাটাই জীবনের লক্ষ্য। আপনার কাছে প্রচুর টাকা আছে। সারা পৃথিবী আপনার পায়ের তলায় থাকতে পারে। তবে সুস্বাস্থ্য না থাকলে গোটাটাই মাটি। এখানে একটা সাম্যবাদ রয়েছে। তাই খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা ঠিক না থাকলে সবাই সমস্যায় পড়বেন।

কিছু কিছু উপাদান আমাদের শরীরে ভীষণই প্রয়োজন। এই উপাদানগুলি মানুষকে সুস্থ রাখতে পারে। এবার এই তালিকায় একবারে প্রথমের দিকে আসবে ফ্ল্যাভানয়েডসের নাম। বহু অসুখকে দূরে রাখে এই উপাদান। এমনকী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।

এদিকে বিশেষজ্ঞদের একাংশের কথায়, ভিটামিন পি শরীরে কম থাকলে নানা জটিল অসুখ হওয়া সম্ভব। তাই এমন খাবার খেতে হবে যার মধ্যে ভালো পরিমাণে এই উপাদান রয়েছে।

ভিটামিন পি কী?

আগে একবার সহজে বলেছি। তবে বিজ্ঞানসম্মতভবে বললে, এর নাম হল বায়োফ্ল্যাভানয়েডস। এর ৬টি ভাগ রয়েছে। এনআইএইচ জানাচ্ছে, এখন মোটামুটি ৬ হাজার ধরনের ফ্ল্যাভানয়েডনস চিহ্নিত করা গিয়েছে। ১৯৩০ সালে কমললেবুর মধ্যে এই উপাদান প্রথম পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তারপর থেকেই এই উপাদানকে ভিটামিন পি নামে ডাকা হয়। তবে প্রথমেই বলে রাখি, ফ্ল্যাভানয়েডস কিন্তু ভিটামিন নয়। শুধু নামটাই রয়ে গিয়েছে।

অভাব হলেই বিপদ

ভিটামিন সি ঘাটতি থাকার লক্ষণের সঙ্গে এর মিল রয়েছে। দেখা গিয়েছে ভিটামিন পি কম থাকলে রক্ত গড়াতে পারে। এক্ষেত্রে রক্তনালী ফেটে যায়। ফলে রক্ত বেরিয়ে আসে। এছাড়া আর্থ্রাইটিস থাকা ব্যক্তিদের শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে প্রদাহ হতে পারে। এছাড়া খুব বেশি ডেফিসিয়েন্সি থাকলে স্কার্ভি, দাঁত ও মাড়ির সমস্যা, অ্যানিমিয়া ইত্যাদি রোগ হওয়া সম্ভব। পাশাপাশি ত্বক, চুল শুষ্ক হয় অনেকের। তাই সতর্ক হন।

কোন খাবারে মেলে?

ফ্ল্যাভানয়েডস বা ভিটামিন পি যাই বলুন না কেন, এই উপাদান কিন্তু ফল ও সবজির গাঢ় রং তৈরির পিছনে থাকে। তাই গাঢ় রঙের সবজি বা ফল খেলে শরীরে ভালোমতো পৌঁছে যেতে পারে এই ভিটামিন। এক্ষেত্রে অলিভ তেল, বেরি জাতীয় ফল, পেঁয়াজ, টমেটো, রেড ওয়াইন, চা, কোকাও, আপেল, আঙুর, স্ট্রবেরি, সোয়াবিন, সোয়াবিন থেকে তৈরি অন্যান্য খাবার, ক্যানবেরিজ, স্ট্রবেরিজ, ব্ল্যাকবেরিজ, ব্লুবেরিজে এই উপাদান মেলে।

মস্তিষ্ক দ্রুত কাজ করে

এনসিবিআই-এর রিপোর্ট বলছে, ফ্ল্যাভানয়েডস ব্রেনের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে। এমনকী এই অঙ্গকে সঠিকভাবে কাজ করতে এবং কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে স্মৃতিশক্তি মজবুত হয়। এমনকী যে কোনও কাজ হয় দ্রুত। তাই জীবনে উন্নতি করতে চাইলে খেতে হবে এই উপাদান যুক্ত খাবার। আশা করছি ভালো থাকতে পারবেন অনায়াসে। সব বাধা পেরিয়ে যাবেন সহজে।

ডায়াবিটিস থাকে দূরে

​এখন সারা দেশ জুড়ে টাইপ টু ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগী আপনি পেয়ে যাবেন। এই অসুখ কিন্তু কিডনি, হার্ট, চোখের সমস্যার কারণ। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন জানাচ্ছে, ফ্ল্যাভানয়েডস যুক্ত খাবার খেলে টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কয়েকগুণ কমে। এক্ষেত্রে ৩০০ এমজি ফ্ল্যাভানয়েডস রোজ খেলে টাইপ ২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে ৫ শতাংশ। ফলে নিজেকে এই রোগ থেকে বাঁচাতে চাইলে অবশ্যই ভিটামিন পি খান।

হার্টের রোগ কাছে আসে না

হার্টের অসুখে আক্রান্ত রোগী এখন খুব দেখা যায়। কমবয়সিরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে কিছু কিছু ফ্ল্যাভানয়েডস এই রোগ দূরে রাখতে পারে। তালিকায় রয়েছে ফ্ল্যাভানলস, অ্যান্থোসায়ানিন, প্রান্থোসায়নায়ডিনস, ফ্ল্যাভোনস, ফ্ল্যাভোনিজ এবং ফ্ল্যাভান ৩ ইত্যাদি। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে আজ থেকে ভিটামিন যুক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে দিন।

বিদ্র: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।