



প্লেট যদি রামধনু রাঙিয়ে দেওয়া যায়, তার চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না৷ স্বাস্থ্য ও পুষ্টির এ হল গোড়ার কথা৷ কিন্তু সে কথা কে বোঝাবে বাচ্চাকে৷ যতই সাজিয়ে-গুছিয়ে পরিবেশন করা হোক না কেন, থালায় শাক-সবজি-ফল দেখলেই তার বিরক্তি৷




খাওয়া নিয়ে নিত্য লড়াই৷ হার মানে না কেউই৷ এখনকার ফাস্টফুড যুগে রোল-চাউমিন আর ইনস্ট্যান্ট নুডুলসের যুগে শাক-সবজি আর ফল দেখলে নাক সিঁটকোয় শিশুরা। বাবা-মা তখন সহজ পন্থা হিসেবে কখনও লুকিয়ে খাওয়ানো শুরু করেন, কখনও নানাভাবে মাথা খাটিয়ে নতুন ধরনের খাবার বানানোর চেষ্টা করেন৷




এই প্রতিবদনে রইল তেমন কিছু অভিজ্ঞতার কথা, যে কৌশলগুলি অবলম্বন করেবাবা-মা তাঁদের সন্তানদের সঠিক পুষ্টিকর খাবার খাইয়েছেন। কী ভাবে আসুন দেখে নেওয়া যাক।




সবজি-ফল খাওয়ানোর বিভিন্ন পন্থা
জুকিনি ও গাজর মিহি করে কুচিয়ে বা গ্রেট করে সামান্য অলিভ অয়েলে করে সতে করুন, যাতে নরম পেস্টের মতো হয়ে যায়৷ তারপর কোনও খাবারে চিজ মিশিয়ে গ্রিল করার সময় মিশিয়ে দিন৷ জুকিনির প্রচুর পুষ্টি থাকলেও আদতে তার কোনও স্বাদ নেই৷ কাজেই অল্প করে যে খাবারে মেশানো যায়৷ খাবারের স্বাদ বদল হয় না তাতে৷ গাজরও অল্প মেশালে ধরা যায় না৷ রংয়ে কেবল বদল আসে খানিকটা৷ এবং তাতে ভালই হয়৷ খাবারের লাল বা হলুদের ছোঁয়া থাকলে তা আরও লোভনীয় হয়ে ওঠে বলে বিভিন্ন স্টাডিতে জানা গেছে৷




কেমন করে খাওয়াবেন?
স্বাদ ও বর্ণহীন জুকিনি, অল্প পালং, কলা, অ্যামন্ড দুধ, পি-নাট বাটারের মতো উপকারি উপাদান দিয়ে স্মুদি বানিয়ে উপকারের পাল্লা আরও ভারী করতে ও সঙ্গে স্বাদ যোগ করতে চকলেট প্রোটিন পাউডার মিশিয়ে দিন দু-স্কুপ৷ প্রোটিন পাউডারের বদলে স্ট্রবেরি বা ব্লুবেরিও মেশানো যায়৷ হালকা ঠান্ডা করে বা দু-কুচি বরফ মিশিয়ে পরিবেশন করুন৷




পাস্তা সসে মিশিয়ে দিন মিষ্টি আলু, পালং ও গাজরের পিউরি। এখন ফল পছন্দ তা দিয়ে ফ্রুট স্যালাড বানিয়ে দিন৷ দু-এক টুকরো মিষ্টি আলু গ্রিল করে মেশাতে পারেন৷ প্যাক করা কুমড়োর পিউরি কিনে প্যানকেক, সস বা মাফিনে ছড়িয়ে দিতে পারেন৷ অল্প পালং শাক কুচি মেশাতে পারেন চাওমিন থেকে শুরু করে মাছ, মাংস সবেতেই৷ মটরশুঁটির রুটি বানাতে পারেন৷




আলুসেদ্ধ মাখার সময় সামান্য মিষ্টি আলু ও দু-এক টুকরো অন্য সবজি মিশিয়ে নিলে খুব একটা বোঝার উপায় থাকে না৷ মাফিন বা বিস্কুট বেক করার সময় ব্রকোলি, পালং, কুমড়ো, কলা, স্কোয়াশ ইত্যাদি নানা কিছু মেশানো যায় অল্প করে৷




কখন কোনটা খাওয়াবেন?
ব্রেকফাস্ট- একটা সেদ্ধ ডিমের সঙ্গে সবজি মেশানো প্যানকেক ও ফল মেশানো ইয়োগার্ট দিতে পারেন৷ বা দিতে পারেন সব রকম সবজি ও অল্প তেল দিয়ে বানানো মশালা অমলেট, ম্যাসড পটেটো ও টাটকা ফল৷ বাঙালি মতে খাওয়াতে চাইলে সবজি ও মিক্সড ডাল দিয়ে কিনোয়া বা দালিয়ার খিচুড়ি বানিয়ে দিতে পারেন৷ সঙ্গে একটা ফল৷ চলতে পারে হাতে গড়া রুটি, পাঁচমেশালি সবজি, ডিম ও ফল৷




দুপুরে ও রাতে- ঘরে বানানো ভাত/ডাল, ডাল, স্যালাড, সবজি, মাছ/ডিম/চিকেনের কোনও বিকল্প নেই৷ দুপুরে খাওয়ার পর এক-আধটা ফল বা ফ্রুট স্যালাড৷ আলাদা করে সবজি খেতে না চাইলে ডালে মিশিয়ে দিতে পারেন৷ সবজির ব্রথ খাওয়াতে পারেন৷
মাঝ-সকালে ও বিকেলে- স্ন্যাক্স হিসেবে শুকনো বা টাটকা ফল, ইয়োগার্ট, হামাস দিয়ে গাজর/বেলপেপার/শশা দিতে পারেন৷ বিকেলে খিদে বেশি পেলে সতে ভেজিটেবল বা শশা-পেঁয়াজ-টম্যাটো-ধনেপাতা দিয়ে মুড়ি দিতে পারেন৷



