মায়ের স্পর্শ সন্তানের আবেগকে সহজেই সামলাতে পারে, দেখুন বিস্তারিত

গবেষণায় দেখা গেছে, শারীরিক সংযোগ touch therapy শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে শৈশবে। মায়ের স্পর্শ তাই সন্তানের আবেগকে সহজেই সামলাতে পারে৷ লিখছেন অবন্তী সিনহা শুক্লা৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফ্যামিলি থেরাপিস্ট ভার্জিনিয়া স্যাটি-র মতে, সন্তানের ভালো থাকার জন্য দৈনিক ৪ বার জড়িয়ে ধরার প্রয়োজন, যত্নের জন্য ৮ বার এবং বিকাশের জন্য ১২ বার আলিঙ্গনের touch therapy প্রয়োজন।

শিশুর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য তাকে জড়িয়ে ধরা, চুমু খাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো শিশুর ভালো অনুভূতির হরমোন নিঃসৃত করে যা শিশুর বিকাশকে প্রভাবিত করে।শিশুরা কোনো ভুল করলে তাদের যেমন বকা হয়, একইভাবে তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দ্রুত আলিঙ্গন করা এবং জড়িয়ে ধরাও প্রয়োজন।

সন্তান যদি একই ভুল বারবার করে, এক্ষেত্রে আপনাকে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না৷ সন্তানের প্রতি বিরূপ মানসিকতা নিয়ে তাকে মারধর বা প্রহার করতে যাবেন না৷ এতে ফল বিপরীত হতে পারে৷বরং ওর পাশে থাকুন৷ ওকে বুঝতে দেবেন না ওকে সাহায্য করার মতো কেউ নেই।

সন্তান যদি অকারণ জেদ বা বায়না বাড়িয়ে দেয়, অনেক পরিবারেই মা বা বাবা তাকে চরম মারধর করে বসেন৷ তা না করে,আপনি আপনার শিশুর সাথে কথা বলার চেষ্টা করুন। শিশু কী চাইছে সেটা শোনার চেষ্টা করুন।তারপর ঠান্ডা মাথায় তাকে বোঝান, সে যেটার জন্য বায়না করছে সেটা যুক্তি সঙ্গত নয়৷পরিবর্তে আপনার সাধ্যের মধ্যে যা আছে, সেটা তাকে দিয়ে প্রাথমিক ভাবে শান্ত করুন৷

সন্তানের বয়ঃসন্ধিকালীন আচরণ খেয়াল করুন। ওকে কথায় কথায় দোষেরোপ বা বকাবকি করবেন না। ওর সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করুন এবং কী বলতে চায় তা মনোযোগ সহকারে শুনুন। ওকে কথা বলার সুযোগ দিন। আপনার সন্তান যদি কোনও অন্যায় করে থাকে এবং সেটি অন্য কোনও সূত্রে জানতে পেরে থাকেন, তাহলে আগেই ওর উপর খড়্গহস্ত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না৷

বোঝার চেষ্টা করুন, আপনার ছেলে বা মেয়ে, ঘটনাটি জানায়নি, কারণ প্রথমতঃ ও আপনাকে বলতে ভয় পাচ্ছিল।এর কারণ আপনি ওকে ধমক দিতে পারেন, বকাবকি করতে পারেন।তাই আগে ওর মুখ থেকে শুনুন কেন সে এই অনৈতিক কাজটি করল৷ এতে অন্য কারও প্ররোচনা ছিল কিনা৷ এটা হয়তো আপনার সন্তানের দোষ নয়।

ঘটনাটি যে ঘটাতে প্ররোচিত করেছে, এটা তারই দোষ। অনেক সময় বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েরা বন্ধুদের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ নিয়েও, ভালো-মন্দ না বুঝেই অনেক ধরনের অন্যায় করে বসে৷ও হয়তো বুঝতে পারেনি ব্যাপারটি কী ঘটতে যাচ্ছে, কারণ এর পরিণাম বিষয়ে ওর কোনও পূর্ব ধারণা ছিল না। তাই যুক্তি বুদ্ধি দিয়ে বিচার করুন, এর জন্য ওকে কী এবং কতটা শাস্তি দেবেন৷

সন্তানের রাগ কমাতে কী করবেন?

শিশু বা কিশোরটি কোনও কারণে খুব বেশি ক্ষেপে গেলে বা আবেগপ্রবণ হলে তাকে জড়িয়ে ধরুন, তার গালে চুমু খান touch therapy। এতে তার মন শান্ত হয়ে আসবে।

বড়োদের মতো ছোটোরাও মাঝে মাঝে অবসাদ অনুভব করে। তাদেরকে এই হতাশা ও অবসাদ থেকে বের করে আনার জন্য জড়িয়ে ধরা ও চুমু খাওয়ার গুরুত্ব অনেক।

এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং তারা তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করেতে পারে।

সুখী সন্তানই, সুস্থ সন্তান। আপনার সন্তানের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করুন৷ ভালোবাসা প্রকাশের জন্য কথা বলার সময় তাকে স্পর্শ করুন। এটা কেবল সন্তানকে খুশিই রাখে না পাশাপাশি তার আত্মবিশ্বাস ও আপনার কাছে তার গুরুত্ব অনুভব করাতেও সাহায্য করে।

অভিভাবক ও সন্তানের মধ্যে শারীরিক স্পর্শ সম্পর্ক জোরালো করতে সাহায্য করে। ফলে শিশু নিজেকে নিরাপদ অনুভব করে।

জড়িয়ে ধরার উষ্ণতা সন্তানের ভয় দূর করতে সহায়তা করে এবং সম্পর্কের প্রতি বিশ্বাস বাড়াতেও সাহায্য করে।